ইবাদতের অক্ষরেখা আল্লাহর সন্তুষ্টি

যদ্রুপ নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের চলনগতি ও ঘূর্ণনগতির মত বিভিন্ন গতি থাকা সত্বেও সর্বদা এক নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে, তদ্রুপ ইবাদতও তার সমস্ত কাঠামো ও বিভিন্ন প্রকার আকার-আকৃতি সত্বেও তার নির্দিষ্ট পরিক্রমণ রেখায় সন্নিবেশিত, যা হচ্ছে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন, যদিও স্থান ও কাল এবং ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত শর্তগুলো এ অক্ষরেখায় চলনপদ্ধতিকে পরিবর্তন করে থাকে। যেমন-সফর বা ভ্রমণ নামাযকে দুই রাক্আত করে দেয় এবং রুগ্নতা নামাযের কাঠামো পরিবর্তন করে দেয়। কিন্তু দুই রাক্আত বিশিষ্ট অথবা সংক্ষিপ্ত নামাযও নামায এবং আল্লাহ্র স্মরণ, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন ও তাঁর নির্দেশ বাস্তবায়নের অক্ষরেখায় প্রতিষ্ঠিত (ওয়া আক্বিমুস্ সালাতা লি যিকরি)।( সূরা: ত্বাহা, ১৪তম আয়াত।)
ইবাদতের আত্মিকতা
ইবাদত হচ্ছে আত্মার খাদ্যস্বরূপ। উত্তম খাদ্য সেটিই যেটি শরীর কর্তৃক আকর্ষিত হবে, উত্তম ইবাদতও সেটিই যেটি আত্মা কর্তৃক আকর্ষিত হবে, অর্থাৎ স্বতঃস্ফূর্ততা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। বেশী পরিমাণ খাদ্য খাওয়া ধর্তব্য নয়, বরং উপাদেয় খাদ্য খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
জাবের ইবনে আব্দিল্লাহ্ আনসারীকে পয়গাম্বর আকরাম (সা.) বলেন: “ইন্না হাযাদ্ দ্বীনা লা মাতীনুন্ ফাআওগিল্ ফীহি বিরিফ্ক্বীন্ ওয়া লা-তুবাগ্গিযু ইলা নাফ্সিকা ইবাদাতিল্লাহ্।( বিহার, ৭১তম খন্ড, পৃ. ২১২)

” অর্থাৎ নিশ্চয় আল্লাহ্র এ দ্বীন সুপ্রতিষ্ঠিত। অতএব, এর সম্পর্কে সদাচার কর (আর যখন মানসিকভাবে প্র্রস্তুতি নেই তখন ইবাদতকে নিজের উপর বোঝা হিসেবে চাপিয়ে নিও না) যাতে ইবাদত তোমার নিকট বিরাগভাজন না হয়।
অপর এক হাদীসে রসুল আকরাম (সা.) বলেন: “তূবা লিমান্ ’আশিক্বাল্ ইবাদাতা ওয়া ’আনাক্বাহা।” অর্থাৎ সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে ইবাদতের প্রতি আসক্তি রাখে এবং প্রিয়তমের ন্যায় তাকে বাহুডোরে গ্রহণ করে।

সূত্র :  তাফসীরে নামায গ্রন্থ থেকে ।

Related posts

ইমাম জাফর আস-সাদিক (আ.): প্রজন্মের শিক্ষক

মুসলিম ঐক কেন ও কিভাবে?

সকল নৈতিক গুণাবলীর ভিত্তি

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Read More