ইমাম জাফর সাদিক (আ.) মানবিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য মূল্যবান দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তিনি ন্যায্যতা, সততা, মানুষের সেবা এবং মানবিক মর্যাদা রক্ষার মতো নৈতিক মূলনীতি রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন।
ইসলামের মহানবী মুহাম্মাদ (সা) ‘র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য ও বংশধর হযরত ইমাম জাফর আস সাদিক (আ.) মানুষের সাথে সম্পর্ক ও লেনদেনের ক্ষেত্রে এমন কিছু নীতিমালা উল্লেখ করেছেন যাকে “মানবসেবামূলক বা মানবতাবাদী” ইশতেহার বলা যেতে পারে। এসব নীতিমালার মধ্যে রয়েছে ন্যায্যতা, সততা, মানুষের সেবা, সদাচার, অন্যদের বিশ্বাসর প্রতি সম্মান, দোষ-ত্রুটি গোপন এবং মানবিক মর্যাদা রক্ষার মত গুণ। এসব গুণের চর্চা মানব সমাজকে সুস্থ রাখা, ভারসাম্যপূর্ণ রাখা ও ব্যক্তিক উন্নয়ন এবং খোদায়ি সমাজের সামষ্টিক বিকাশের জন্য জরুরি। এ প্রবন্ধে এইসব বিষয়ে ইমাম জাফর আস সাদিক-আ’র কয়েকটি অমর বাণী তুলে ধরছি:
মানুষের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে দেয়া
আল্লাহ যে দানকে ভালোবাসেন তা হল মানুষের মধ্যে সংস্কার, যখন তাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় এবং তারা একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়।
মানুষের সাথে ন্যায্য আচরণ
যে ব্যক্তি মানুষের সাথে ন্যায্য আচরণ করে, অন্যরা তার রায় মেনে নেয়।
মানুষের সেবা করা
যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের চাহিদা পূরণের জন্য প্রচেষ্টা চালাবে, আল্লাহ তাআলা তার আমলনামায় হাজার হাজার নেকী লিখবেন এবং এর ফলে তার আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, ধর্মীয় ভাই এবং পরিচিতজনদেরও ক্ষমা করা হবে।
মানুষের সঙ্গে সততা
তুমি সত্যবাদী এবং বিশ্বস্ত হও, কারণ এভাবেই তুমি মানুষের সম্পদের ভাগ পাবে।
মানুষের সঙ্গে সদাচার ও সুন্দর ব্যবহার
যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তিনটি কাজ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত ফরজ করে দেন: বিপদ ও অভাবের সময় দান করা, মানুষের প্রতি সদয় হওয়া এবং নিজের ও অন্যের অধিকারের প্রতি এক চোখ রেখে দেখা।
মানুষের সঙ্গে সুন্দর, ভদ্র ও সংযত ভাষায় কথা বলা
হে আমাদের শিয়ারা, আমাদের সম্মান ও অলংকার হও এবং আমাদের লজ্জা ও অসম্মানের কারণ হয়ো না। মানুষের সাথে ভালো কথা বলো, তোমার জিহ্বাকে সংযত রাখো এবং অপ্রয়োজনীয় ও কুৎসিত কথা এড়িয়ে চলো।
মানুষের মানবীয় মর্যাদা রক্ষা করা
যারা মানুষের সামনে এগিয়ে থেকে হাঁটতে পছন্দ করে এবং তাদের পিছনে মানুষ থাকতে পছন্দ করে তারাই সবচেয়ে খারাপ মানুষ।
মানুষের রুটি-রুজির যোগান দেয়া
সকল মানুষের তিনটি জিনিসের প্রয়োজন: নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার এবং সমৃদ্ধি।
মানুষের বিশ্বাসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন
মানুষের মতামত বা ধর্ম-বিশ্বাসের বিষয়ে অনুসন্ধান করো না, নাহলে বন্ধু হারাবে।
মানুষের দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখা
জেদ, অর্থহীন হাসি, মানুষের পাপ খুজে দেখা বা পরীক্ষা করা এবং আপনার সাথে সম্পর্কিত নয় এমন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা এড়িয়ে চলুন।