আয়-উপার্জনের খুমস
মাসআলা (১০৯৫): যথাযথ শর্তাবলির অধিকারী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব হলো তার আয়-উপার্জন থেকে জীবন নির্বাহ খরচাদি মেটানোর পর যা উদ্বৃত্ত থাকবে, তা হতে খুমস প্রদান করবে। এখানে আয়-উপার্জন বলতে উদ্দেশ্য, ঐসব মাল-সম্পদ যা অর্থনৈতিক কর্ম-তৎপরতার মাধ্যমে হস্তগত হয়। পরিভাষাগতভাবে যার মধ্যে ‘উপার্জন’ কথাটির অবদান থাকে।
মাসআলা (১০৯৬): আয়-উপার্জনের বিভিন্ন প্রকার হয়। যেমন:
১. কৃষিজ উপার্জন, যা কৃষি কাজের মাধ্যমে আসে।
২. ব্যবসায়িক উপার্জন, যা ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনার মাধ্যম আসে।
৩. সহায়-সম্পত্তিগত উপার্জন, যা সম্পত্তি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে আসে। উদাহরণস্বরূপ স্থাবর সম্পত্তিজাতীয় পুঁজি, যেমন, বাড়ি, মোটর ইত্যাদি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে কিংবা উৎপাদনমূলক যন্ত্রপাতি, যেমন: ওয়েল্ডিং মেশিন, মোজা বুনন যন্ত্র ইত্যাদি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে আসে।
৪. অধিকারগত উপার্জন, যা ব্যক্তিরা নিজেকে ভাড়ায় লিপ্ত করার মাধ্যমে পায়। যেমনঃ একজন শিক্ষক পাঠদানের মাধ্যমে, একজন প্রকৌশলী কারিগরি কর্ম কান্মাডের মাধ্যমে কিংবা একজন দিনমজুর তার সরল শ্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে যে আয় রোজগার করে থাকে। অনুরূপভাবে অন্য যে কোনো ব্যক্তি, যে তার জনশক্তিকে অপরের জন্য বিনিয়োগ করে তার বিনিময়ে অধিকার ও মজুরি লাভ করে থাকে।
মাসআলা (১০৯৭): উত্তরাধিকার সম্পত্তি এবং তা বিক্রয়লব্ধ অর্থে খুমস নেই, যদিও তার মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকুক। তবে যদি তা ব্যবসা ও মূল্য বৃদ্ধির নিয়্যাতে সংরক্ষণ করে থাকে সেক্ষেত্রে বিক্রয়ের পর, এহতিয়াতে ওয়াজিব অনুসারে, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মূল্যের খুমস প্রদান করতে হবে।
মাসআলা (১০৯৮): যে মীরাস অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পাওনা হয়, তাতে খুমস নেই। তবে মীরাস হতে প্রাপ্ত লভ্যাংশের যে পরিমাণ তাদের শরীয়াত মোতাবেক সাবালক হওয়ার সময়কাল পর্যন্ত তাদের মালিকানায় অবশিষ্ট থাকে, এহতিয়াতে অনুসারে, তাদের প্রত্যেকের উপর ওয়াজিব হলো, সাবালক বয়সে উপনীত হওয়ার পর ঐ অংশের খুমস প্রদান করা।
মাসআলা (১০৯৯): মোহরানার খুমস নেই। আর যেহেতু খুমস নেই, একারণে মোহরানা মোয়াদী হোক বা মেয়াদী না হোক আর নগদ অর্থ হোক বা কোনো পণ্যদ্রব্য হোক, তাতে কোন পার্থক্য নেই।
মাসআলা (১১০০): দান ও উপহারে খুমস নেই। যদিও এহতিয়াতে মুস্তাহাব হলো, যদি তা এক বছরের খরচের তুলনায় উদ্বুত্ত হয়, তাহলে তার খুমস প্রদান করা।
সূত্রঃ রেসালায়ে মুস্তাখাব আল-আহকাম বই থেকে সংগ্রহীত
হযরত আয়াতুল্লাহ আল-উজমা সাইয়েদ আলী খামেনেয়ী (মুদ্দা যিল্লুহু )- এর ফতোয়া অনুযায়ী সংকলিত
