ইসলামী নৈতিকতা (আখলাক)-এর ভিত্তি হিসেবে যে গুণটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো ‘সবর’ বা ধৈর্য। ধৈর্য শুধু বিপদ-আপদে নীরবে সহ্য করার নাম নয়, বরং এটি একটি ব্যাপক মানসিক ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন যা মুমিনকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর আনুগত্যে অবিচল থাকতে শেখায়। সবর এমন একটি শক্তি যা মানুষকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে দৃঢ় রাখে, পাপ থেকে বিরত রাখে এবং কষ্টের সময় হতাশ হতে দেয় না।
কুরআন শরীফের দৃষ্টিতে ধৈর্যের স্থান
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে মুমিনদেরকে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ধৈর্যশীলদের জন্য মহাপুরস্কারের ঘোষণা করেছেন। সবরকে ইবাদতের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে দেখা হয়েছে:
ধৈর্যের প্রকারভেদ
ইসলামী শিক্ষায় সবরকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়, আর এই তিন ধরণের সবরই একজন মুমিনের সামগ্রিক জীবনকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করে তোলে:১. আল্লাহর আনুগত্যে ধৈর্য: কঠিন হলেও নিয়মিত সালাত, রোজা এবং অন্যান্য ইবাদত সঠিকভাবে পালন করার জন্য যে মানসিক দৃঢ়তা প্রয়োজন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হাদীসে ধৈর্যের ফল
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সবরকে ঈমানের অর্ধেক বলে অভিহিত করেছেন এবং এর চরম গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“ধৈর্য হলো আলো।”এই হাদীসটি ইঙ্গিত দেয় যে, সবর অন্ধকারে পথ দেখানোর মতো। এটি মানব হৃদয়ে এমন এক জ্যোতি তৈরি করে যা তাকে জীবনের হতাশা ও সংশয় থেকে মুক্ত রাখে।
আহলে বাইত (আঃ)-এর শিক্ষায় সবর
আহলে বাইত (আঃ)-এর পবিত্র ইমামগণ ধৈর্যকে কেবল তত্ত্ব হিসেবে নয়, বরং তাঁদের কর্মময় জীবনে এর বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তাঁরা জীবনের কঠিনতম সময়েও আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন,
আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আঃ) সবরের গুরুত্ব বর্ণনা করে বলেছেন:
“ঈমানের ক্ষেত্রে ধৈর্যের স্থান এমন, যেমন শরীরের মধ্যে মাথার স্থান। যার ধৈর্য নেই, তার ঈমান নেই।” নাহজুল বালাগা, প্রজ্ঞাবাণী: ৮২]
