ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে যে একটি মাত্র সত্যকে মানবসমাজ নির্দ্বিধায় ও তর্কাতীতভাবে মেনে নিয়েছে তা হলো মৃত্যু। প্রাণ সঞ্চার হলে সে প্রাণের বিনাশ একদিন হবে এটাই অবধারিত। অথচ এমন অমোঘ সত্যকে কখনো কখনো মেনে নিতে মন সায় দেয়না। কিন্তু তারপরও সৃষ্টিকর্তাকর্তৃক নির্ধারিত ও অলংঙ্ঘনীয় এ ঘটনা আমাদের জীবনে ঘটতেই থাকবে এবং আমাদেরকেও নতশিরে তা মেনে নিতে হবে। তাই গভীর মর্মবেদনা ও শোকে জর্জরিত আমাদের সকলকেই হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন এর অকালে চলে যাওয়াকে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই।
মাত্র ৩৮ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনের প্রায় এক তৃতীয়াংশই যার কেটেছে ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের আবহে। প্রথমে ছাত্র হিসেবে এবং পরবর্তীতে দু’বার শিক্ষক এবং শিক্ষা বিভাগের প্রধান হিসেবে। সদা হাস্যেজ্জ্বল, বিনয়ী, পরপোকারী ও নিরহংকারী এই মানুষটি এত দ্রুত ও আকস্মিকভাবে চলে যাবেন তা ছিলো আমাদের কল্পনাতিত। সমাজকে অনেক কিছুই তো তার দেয়ার ছিলো। তাইতো তিনি এক উজ্জ্বল স্বপ্ন নিয়ে সৈয়দপুরে স্থানান্তর হন। সৈয়দপুর তথা সন্নিহিত এলাকায় ধর্মীয় ও সামাজিক জাগরণের মাধ্যমে তার স্বপ্ন পূরণ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করবেন এটাই ছিল তার ব্রত। কিন্তু “মানুষ ভাবে এক আর আল্লাহ ভাবেন আর এক” এ প্রবাদটিই সত্য হলো শেষ পর্যন্ত।
আত্মীয়তার সূত্রে মরহুম সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ নাক্বী ইমাম এর আপন চাচাতো বোনের স্বামী ও হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ ইব্রাহীম খলিল রাজাভী’র আপন চাচাতো ভায়রা।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার সন্তান, আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেলেও স্ত্রী, সন্তানদের ভবিষ্যৎ অবলম্বন হিসেবে সৎ কর্ম ও সুনাম ছাড়া কিছুই রেখে যেতে পারেননি। তারপরও যাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে সকলের মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন তিনিই তাঁর অপার রহমত ও করুণার প্রশান্ত ছায়াতলে মরহুমের স্ত্রী-সন্তানকে স্থান দান করবেন এ বিশ্বাস আমাদের আছে। কেননা হুজ্জাতুল ইসলাম সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন দ্বীনের কাজেই তো বের হয়েছিলেন সেদিন, যেদিন যুগের ইমামের (আ.) পবিত্র জন্মদিবস ছিলো অর্থাৎ ১৫ শা’বান ১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক ১লা মে ২০১৮ইং।
তার এই অকাল ও আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। তার এই মৃত্যু বাংলাদেশের শিয়া আলেম সমাজে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি করবে যা সহসা পূরণ হবার নয়।
আমরা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারসহ আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহীকে জানাই আন্তরিক শোক ও সমবেদনা।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর মহান করুণা ও দয়ার মাধ্যমে মরহুম সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেনকে জাওয়ারে মোহাম্মদ (সা.) ও আলে মোহাম্মাদে (আ.) স্থান দান করুন।
ইলাহী আমিন।
প্রকাশক
পাক্ষিক ফজর