ইসলাম ধর্মের বিশেষ ১০ বৈশিষ্ট্য

by Syed Yesin Mehedi

ইসলাম আল্লাহর মনোনীত চূড়ান্ত ধর্ম ও জীবনবিধান। ইসলাম ধর্মকে আল্লাহ এমন সব অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন যা পৃথিবীর অন্য ধর্মগুলোতে পাওয়া যায় না। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণেই ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে টিকে থাকবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বিন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বিন হিসেবে মনোনীত করলাম।
ইসলাম আল্লাহর মনোনীত চূড়ান্ত ধর্ম ও জীবনবিধান। ইসলাম ধর্মকে আল্লাহ এমন সব অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন, যা পৃথিবীর অন্য ধর্মগুলোতে পাওয়া যায় না। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণেই ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে টিকে থাকবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বিন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বিন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৩)
ইসলামের ১০ বৈশিষ্ট্য
ইসলাম ধর্মের অসংখ্য বৈশিষ্ট্য থেকে নিম্নে ১০টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো
১. ইসলাম চূড়ান্ত জীবনবিধান : ধর্ম বা জীবনবিধান হিসেবে ইসলামই চূড়ান্ত। আল্লাহর কাছে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম ও মতবাদ মূল্যহীন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর কাছে একমাত্র দ্বিন (বা জীবনবিধান)।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বিন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে হবে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮৫)
২. আসমানি ধর্ম : ইসলাম মানবরচিত বা মানুষের প্রবর্তিত কোনো দ্বিন নয়। এই দ্বিন আল্লাহর পক্ষ থেকে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এভাবে আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি রুহ তথা আমার নির্দেশ; তুমি তো জানতে না কিতাব কী এবং ঈমান কী! পক্ষান্তরে আমি তাকে করেছি আলো, যা দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা পথনির্দেশ করি; তুমি তো প্রদর্শন করো কেবল সরল পথ।’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ৫২)
৩. সংরক্ষিত দ্বিন : পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মগুলো সংরক্ষিত ছিল না।
ফলে যুগে যুগে তাতে বহু পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও বিকৃতি ঘটেছে। এমনকি বিংশ শতাব্দীতে এসেও তাতে বহু সংযোজন ও বিয়োজন হতে দেখা গেছে। কিন্তু আল্লাহ ইসলাম ধর্মকে সবধরনের পরিবর্তন ও বিকৃতি থেকে রক্ষা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই তার সংরক্ষণকারী।’ (সুরা : হিজর, আয়াত : ৯)
ইসলাম সংরক্ষিত অবস্থায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেভাবেই তা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয় এবং সে মনগড়া কথাও বলে না। এটা তো ওহি, যা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে। তাঁকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী, প্রজ্ঞাসম্পন্ন (ফেরেশতা জিবরাইল), সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল।’ (সুরা : নাজম, আয়াত : ২-৬)
৪. সর্বজনীন ও বৈশ্বিক ধর্ম : আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরণ করেছেন এবং কোরআনে আল্লাহ মানবজাতির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর বিবরণ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, হে মানুষ! আমি তোমাদের সবার জন্য আল্লাহর রাসুল, যিনি আকাশমন্ডলি ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী। তিনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৮)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি আত্মসমর্পণকারীদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ, পথনির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদস্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করলাম।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৮৯)
৫. পূর্ববর্তী ধর্মের সত্যায়নকারী : ইসলাম-পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মের সত্যায়নকারী এবং ইসলামে পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মের মৌলিক শিক্ষাগুলো বিদ্যমান। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা বলেছিল, হে আমাদের স¤প্রদায়! আমরা এমন এক কিতাবের পাঠ শ্রবণ করেছি, যা অবতীর্ণ হয়েছে মুসার পরে, এটা পূর্ববর্তী কিতাবকে সমর্থন করে এবং সত্য ও সরল পথের দিকে পরিচালিত করে।’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ৩০)
৬. ভারসাম্যপূর্ণ দ্বিন : ইসলাম মানুষের পার্থিব ও অপার্থিব জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করেছে। ইসলাম যেমন পার্থিব জীবনের আয়োজনগুলো অস্বীকার করে না, তেমনি তাতে নিমজ্জিত থাকার অনুমতি দেয় না। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ যা তোমাকে দিয়েছেন তা দ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান কোরো এবং দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলো না।’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ৭৭)
৭. মানব প্রকৃতির অনুকূল ধর্ম : ইসলাম মানব প্রকৃতির অনুকূল ধর্ম। ইসলাম মানব প্রকৃতির স্বাভাবিক বিকাশ নিশ্চিত করে এবং মানব প্রকৃতির বিরোধী বা তার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এমন বিষয়গুলো ইসলামে নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দ্বিনে প্রতিষ্ঠিত কোরো। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ কোরো, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই। এটাই সরল দ্বিন; কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ জানে না।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ৩০)
৮. মধ্যপন্থী ধর্ম : ইসলাম মানুষকে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলে। কোনো বিষয়ে চরম শিথিলতা ও চরম কঠোরতা ইসলাম পছন্দ করে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এভাবে আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি। যাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ এবং রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হবে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৪৩)
৯. জ্ঞান-বিজ্ঞানের ধর্ম : ইসলাম পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম, যার যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘ইকরা’ (পড়ো) বাক্যের মাধ্যমে। ইসলামে জ্ঞানার্জনকে ফরজ করা হয়েছে। কোরআনের একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদিসে মানুষকে জ্ঞানচর্চার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান? বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : ঝুমার, আয়াত : ৯)
১০. নীতি-নৈতিকতার ধর্ম : ইসলাম আখলাক তথা উত্তম চরিত্র ও নীতি-নৈতিকতার ধর্ম। রাসুলুল্লাহ (সা.) সচ্চরিত্রকে মানুষের ভালো-মন্দের মাপকাঠি হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আর কোরআনে মুমিনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মুমিনরা, যারা বিনয়-নম্র নিজেদের নামাযে, যারা অসার কাজ-কর্ম থেকে বিরত থাকে, যারা জাকাতদানে সক্রিয়, যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে, …যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি করে এবং যারা নিজেদের নামাযে যত্নবান থাকে।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১-৯)

সম্পর্কযুক্ত পোস্ট

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?