তাক্বলীদ ও মুজতাহিদের মানদণ্ড

by Syed Yesin Mehedi

যে মুজতাহিদের তাক্বলীদ করতে হবে তাঁর মধ্যে ইজতিহাদের মান-মর্যাদা ও মাসআলা মাসায়েল নির্ণয়ের যোগ্যতা ক্ষমতা বিদ্যমান থাকা ব্যতীত আর কোন শর্ত শরায়েত থাকা জরুরী কিনা?

 মুজতাহিদ ও মারজায়ে তাক্বলীদের মধ্যে ইজতিহাদের মান-মর্যাদা ও হুকুম-আহকাম নির্ণয়ের যোগ্যতা ও ক্ষমতা বর্তমান থাকার পরও নিম্নে বর্ণিত শর্তাবলী থাকতে হবে।
প্রথম শর্তঃ তাঁকে আদিল বা ন্যায়বিচারক হতে হবে। অর্থাৎ তাঁর ঈমান এতো পরিপূর্ণ ও দৃঢ় হবে যে, কোন ওয়াজিব কর্ম তাঁর থেকে ছুটে যাবে না এবং কোন হারাম কর্ম তাঁর দ্বারা সম্পাদন হবে না। এ কথাটি অন্যভাবে বলা যায়: কোন কবীরাহ গুনাহ বা বড় পাপের কাজ থেকে তিনি অনেক দূরে থাকবেন এবং ছোটখাটো গুনাহ বার বার করবেন না। পাপাচারী মুজতাহিদ যতো বড় বিজ্ঞ আলেমই হোন না কেন কোন অবস্থাতেই তাঁর তাক্বলীদ করা বৈধ হবে না।

দ্বিতীয় শর্ত: আলাম তথা সব চাইতে অধিক জ্ঞানী হবেন। অর্থাৎ অপরাপর আলেমদের চাইতে অধিক ইলম বা জ্ঞান রাখবেন এবং বিজ্ঞতম হবেন। কয়েকজন বিজ্ঞ আলেম ও মান-মর্যাদাসম্পন্ন মুজতাহিদ একই সময়ে বর্তমান থাকলে তাঁদের মধ্য থেকে যিনি সকলের জ্ঞান, বুদ্ধি ও মর্যাদায় শ্রেষ্ঠতম হবেন, মুক্বাল্লিদের উচিত হবে তাঁরই তাক্বলীদ করা। এটা একটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার যে, যখন কোন লোক মারাত্মক রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হবে তখন তাকে সে ডাক্তারের নিকটই নিয়ে যাওয়া হয়, যিনি অপরাপর ডাক্তারদের তুলনায় অধিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও পারদর্শী হবেন। ঠিক তেমনিভাবে যেহেতু মহান আল্লাহর হুকুম আহকাম, দ্বীনের আকীদা-বিশ্বাস ও মাসআলা-মাসায়েল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতএব এ সব বিষয়গুলোও এমন ফকীহ ও মুজতাহিদের কাছ থেকে হাসিল করা উচিত যিনি সর্বাধিক জ্ঞানী, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও পারদর্শী।

তৃতীয় শর্ত: তিনি জীবিত থাকবেন। যে ব্যক্তি জীবনের সূচনা থেকেই পূর্ববর্তী ওলামাগণের (মৃত ওলামাগণের) মধ্যে থেকে কারো তাক্বলীদ করে, তার তাক্বলীদ বিশুদ্ধ নয়। কেননা, সাধারণ মানুষের কোন মুজতাহিদের প্রতি রুজু হওয়া বা তাক্বলীদ করার উদাহরণ হচ্ছে কোন জটিল রুগী ডাক্তারের প্রতি রুজু হওয়ার মত। এখানে প্রকাশ থাকে যে, বুদ্ধিমান ও বিবেকবান লোকদের নিয়ম নীতি ও পন্থা হচ্ছে স্বীয় রোগের চিকিৎসার ব্যাপারে জীবিত ডাক্তারের নিকট প্রত্যাগমন করা। কোন মৃত ডাক্তারের দেয়া চিকিৎসা পত্র মোতাবেক কাজ না করা। হ্যাঁ, কেউ যদি জীবিত মুজতাহিদের তাক্বলীদ করলো আর কিছুদিন তার মাসআলা মাসায়েলের উপর আমল করার পর তিনি মারা গেলেন। এমতাবস্থায় তাঁর তাক্বলীদের উপর অবশিষ্ট থেকে তাঁর নিয়ম কানুনের উপর আমল অনুশীলন অব্যাহত রাখা যায়। বস্তুতঃ, ব্যাপার হচ্ছে তাক্বলীদকৃত মুজতাহিদের মৃত্যুর পরও তাঁর তাক্বলীদের উপর অবশিষ্ট থাকা অশুদ্ধ নয়। কিন্তু আগে থেকেই মৃত ব্যক্তির তাক্বলীদ করা বিশুদ্ধ হবে না।

সম্পর্কযুক্ত পোস্ট

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?